التخطي إلى المحتوى الرئيسي

বেকার গল্প | বিশ্বজীৎ বণিক

Home / গল্পে ও কথায় / / বেকার গল্প | বিশ্বজীৎ বণিক




রাত গুলো বড্ড অসহায় লাগে সুবোধের, ঘুম আসতে চায়না , ঘরে অসুস্থ বৃদ্ধ বাবা , মা শরীরটা জীর্ণ হাতের শিরা উপশিরা একটা একটা করে গোনা যায়।
তবুও সেই শরীর নিয়ে দিনরাত মেশিন চালিয়ে চলেছে ।জামাকাপড় সেলাই করে দুটো পয়সার জন্য।
মায়ের দিকে তাকিয়ে আরও বেশি কষ্ট পায় সুবোধ।কোনরকমে A. M পাশ করে বসে আছে , একটা চাকরি জোগাড় করতে পারেনি ।
ইচ্ছে হলে পারেনা কিনতে নতুন শার্ট, পূজোয় মাকে বাবাকে দিতে পারেনা নতুন জামাকাপড় । দুটো শার্টেই তার দিনগুলো চালাতে হয়।
রাস্তায় যখন বেরোয় বন্ধু গুলো উপহাস করতে ছাড়েনা , কিরে শার্টটা কি পাল্টাবি না ।সুবোধ কোন কথা না বলে। 
মাথা নীচু করে চলে যায় পাশ কাটিয়ে ।ওর কোন বন্ধুও নেই, যারা ছিলো তারাও ওর দিকে এখন ফিরেও তাকায় না , যতই সবাই বলুক পাশে আছি। খারাপ সময়ে ব্যাংও লাথি মেরে চলে যায় ।তার প্রিয় মানুষটাও হাত ছেড়ে চলে গেছে।কলেজ লাইফে তাদের প্রথম দেখা , প্রথম ভালোবাসা ।একটা সময় খুব ভালোবাসতো রঞ্জনা ।কতদিন টিফিনে সুবোধ টিফিন নিয়ে যায়নি , রঞ্জনা নিজের টিফিন ভাগ সামনে দিয়েছে , খাবেনা বললে জোর করে খাইয়ে দিয়েছে, সে সময় সুবোধের বাবা ভালো ছিল, ওদের কোন অভাব ছিলোনা ।
একবছর হলো কলেজ শেষ করেছে , আর এর মধ্যে বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছে ।সেদিন থেকে ওদের অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।দুমাস আগে রঞ্জনা ছেড়ে চলে গেল ।বলেছিল চাকরি জোটাতে পারোনি ,আমার বাবা তোমার সাথে বিয়ে দেবেনা ।সুবোধ বলেছিলো চাকরিটা কি বড়ো কথা ।দেখো তুমি পাশে থাকো , ঠিক একটা না একটা কাজ জুটিয়ে নেবো ।কিন্তু কোন কথা শোনেনা রঞ্জনা ।তোমার আমার সম্পর্ক এখানেই শেষ ।সুবোধ সেদিন কান্নায় ভেঙে পড়েছিলো ।একমাস ঠিক করে খাওয়া দাওয়া করতে পারেনি , ইদানিং মনের জোর বড্ড কমে গেছে সুবোধের।জোর বাড়ানোর মানুষটাও আজ পাশে নেই ।
পাড়ার দাদা , কাকা , জ্যাঠাকে কতবার বলছে সুবোধের মা , আমার ছেলেটার একটা চাকরি যোগার করে দিতে পারবে , ছেলেটা A. M পাশ করে বসে আছে।
সবাই বলে দেখছি।কবে যে সে দেখা শেষ হবে কে জানে।
সুবোধ নিজেই অনেক চেষ্টা করে , চাকরির পেপারটায় একটা ভালো কাজের সন্ধান পেলো,একটা আশার আলো যেন দেখতে পেলো , যাক চাকরিটা যদি পেয়ে যায় ভালোই হবে। ওদের গ্যাজুয়েট ছেলে চাই official job. . . ঢুকেই 12000টাকা , ইন্টারভিউ ডেট ওখানে লেখা আছে , পরেরদিনই 1 টার সময় ।পরেরদিন সকাল সকাল উঠে, স্নান করে , রেডি হয়ে ।মাকে প্রনাম করে বেড়িয়ে পড়লো। সুবোধের একটি তোলা শার্ট ছিল, কোথাও গেলে ওটাই পড়ে যায় ।ওই শার্টটা পড়েছিলো। সুবোধের মা রুটি আর আলুর দম রান্না করে ব্যাগের মধ্যে ভরে দিয়েছিলো। ফিরতে দেরি হলে খেয়ে নিস বাবু। মা বলেছিলো, কাগজে দেওয়া ঠিকানায় ঠিক পৌঁছে গেল সুবোধ ।রাস্তার ডানপাশে বড় অফিসটা চোখে পড়লো , Lift করে পাঁচতলা উঠে ,বাঁ দিকের একটি রুমে ইন্টারভিউ নিচ্ছে একটি মধ্য বয়স্ক ভদ্রলোক ।আরও অনেকেই  বসে থাকতে দেখে , সুবোধ জিজ্ঞাসা করলো এখানেই কি ইন্টারভিউ নিচ্ছে ।একজন বললো হ্যাঁ , এখানে বসুন এক একজন করে ডেকে নেবে। সবাইকে এক এক করে ডাকার পর ।সুবোধ এর ডাক পড়লো এক সময়।সুবোধ রুমে ডুকেছে , সামনের চেয়ারটায় বসতে বললো , সুবোধ বসলো ।সুবোধের বায়োডাটা দেখার পর ।চশমার ফাঁক দিয়ে ভালো করে দেখলেন একবার সুবোধ কে।তারপর বললেন আচ্ছা তুমি আসতে পারো।স্যার আমার চাকরিটা খুব দরকার ।লোকটি বললেন আগে নিজের পোশাক ঠিক করো তারপর চাকরি।তোমার থেকে হাজার স্মার্ট ছেলে আছে।তুমি আসতে পারো।তবুও স্যার আমার খুব দরকার চাকরিটার, বাবা অসুস্থ ।কোন কথা শোনেনা , তুমি যাবে না দারোয়ান ডাকবো।অগত্যা বেড়িয়ে এলো সুবোধ ।সারাদিন প্লাটফর্মের সিটে বসে থেকে থেকে ।অনেক রাতের দিকে বাড়ি ফিরলো সুবোধ।মা বললেন বাবা চাকরিটা হলো বাবু।কোন কথা বলেনা নিজের ঘরে ঢুকে শুয়ে পড়ে বিছানায় । বাবু কিছু খেয়ে ঘুমা , না মা খিদে নেই ।পরদিন বেলা দশটা বেজে যায়, সুবোধ ঘুম থেকে ওঠেনা , এতক্ষণ সুবোধ কখনো ঘুমায় না ।ওর মা দরজা ধাক্কা দিয়েও যখন সাড়া পেলো না ।পাশের বাড়ির লোকজন ডেকে শেষে দড়জা ভেঙে দেখলেন । খাটের উপর সুবোধর নিথর দেহটা পড়ে আছে  , মেঝেতে পড়ে আছে ইঁদুর মারা বিষ।

একলা দুপুরে ঝড়া পাতায় বিশ্বজীৎ বণিক ।

******************সমাপ্ত ****************

تعليقات

المشاركات الشائعة من هذه المدونة

Jani Pabona Lyrics, Imran | Shithee

Jani Pabona Song Is Sung by Imran And Shithee Sarker. Starring: Imran Mahmudul And Nadia Mim. Music Composed by Imran And Peye Haralam Debe Ke Daam Lyrics In Bengali Written by Snahashish Ghosh. Jani Pabona Song Credits: Song: Jani Pabona Singer: Imran & Shithee Sarker Lyrics: Snahashish Ghosh Tune & Music: Imran Mahmudul Director: Saikat Reza Dop: Bikash Saha Edit: Rejaul Raju Label: Central Music and Video [CMV] Jani Pabona Song Lyrics: পেয়ে হারালাম দেবে কে দাম ভেঙে যাওয়া এই ভালোবাসার, থাকবে হৃদয়ে বিষফোঁড়া হয়ে বয়ে বেড়াবো যন্ত্রনা ব্যেথার, আর কি কখনো একফোঁটা স্বপ্ন সাহসটা পাবো দেখার জন্য, জানি পাবোনা, জানি পাবোনা। পেয়ে হারালাম দেবে কে দাম ভেঙে যাওয়া এই ভালোবাসার, থাকবে হৃদয়ে বিষফোঁড়া হয়ে বয়ে বেড়াবো যন্ত্রনা ব্যেথার।। চলতে গিয়ে পথে যদি আবার দেখা হয়ে যায় তোমার আমার, মুখ ফিরিয়ে চলে যাবে জানি হয়তো পাশে থাকবে কেউ আর, তোমাকে ছোঁয়ার আর অধিকার জানি পাবোনা, জানি পাবোনা। পেয়ে হারালাম দেবে কে দাম ভেঙ্গে যাওয়া এই ভালোবাসার, থাকবে হৃদয়ে বিষফোঁড়া হয়...

গিলোই বা গুলঞ্চ এর উপকার ও ব্যবহার | Benefits and uses of Giloi or Gulach

গিলই গাছের পাতা এবং এর আয়ুর্বেদিক গুণ গিলই বা গুলঞ্চের উপকারিতা, ব্যবহার ও আয়ুর্বেদিক গুণ গিলই বা গুলঞ্চ একটি আয়ুর্বেদিক মহৌষধ, যা প্রাচীনকাল থেকে রোগ প্রতিরোধ, জ্বর নিরাময়, এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য উন্নতিতে ব্যবহৃত হয়। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ইমিউন-বুস্টিং গুণ এটিকে বিশেষ করে। এই পোস্টে আমরা গিলইয়ের উপকারিতা এবং ব্যবহার পদ্ধতি বিস্তারিত জানব। গিলইয়ের আয়ুর্বেদিক উপকারিতা রক্তস্বল্পতা দূর করে: গিলই রক্ত উৎপাদনে সহায়তা করে এবং অ্যানিমিয়া দূর করে। প্লীহার স্বাস্থ্য: প্লীহার রোগ নিরাময়ে গিলই অত্যন্ত উপকারী। পেটের সমস্যা: হজম সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য, এবং পেটের রোগে গিলই কার্যকর। চোখের দৃষ্টিশক্তি: গিলই দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে সহায়ক। জ্বর নিরাময়: ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, বা বারবার জ্বর নিরাময়ে গিলই রামবাণ। লিভার ও ডায়াবেটিস: লিভারের স্বাস্থ্য এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। গিলইয়ের রস তৈরির প্রক্রিয়া গিলই কীভাবে ব্যবহার করবেন? রক্তাল্পতা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রতিদিন সকালে ও বিকালে ১-...

গ্রীষ্মকাল চামড়ার ট্যান দূর করার সহজ উপায় | Natural way to remove tan

গ্রীষ্মকালে চামড়ার ট্যান দূর করার সহজ উপায় ট্যান দূর করতে প্রাকৃতিক উপায় গ্রীষ্মকাল শুরু হতে চলেছে এবং দেশের অনেক অংশেই গরমের আরম্ভ হয়ে গিয়েছে। প্রচণ্ড রোদে থাকার ফলে চামড়ার ওপর সবচেয়ে খারাপ প্রভাব পড়ে। রোদে থাকার কারণে চামড়ার কোষগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং এর ফলে চামড়ায় ট্যান পড়ে। মুখের ওপর এই কালো দাগগুলি আমাদের সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয়। এগুলি দূর করতে কস্মেটিক্স ব্যবহার করার চেয়ে প্রাকৃতিক ও গৃহস্থালির উপায় ব্যবহার করাই ভাল। দই এবং টমেটোর ফেস প্যাক দই এবং টমেটো চামড়ার ট্যান দূর করতে এবং নতুন কোষ গঠনে সহায়তা করে। দুই চামচ দই এবং এক চামচ টমেটোর রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এটি চামড়ায় লাগিয়ে 20-25 মিনিট রাখুন, তারপর ধুয়ে ফেলুন। More Articles on this topic লেবুর রস লেবুতে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ থাকে, যা চামড়ার ট্যান দূর করতে খুব কার্যকর। নিম্বুর এসিড চামড়ায় হওয়া টান দূর করে এবং চামড়ায় উজ্জ্বলতা আনে। নিম্বুর রস কাপড়ের সাহায...