[বর্তমান প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জলবায়ু নিয়ে একটি কথোপকথন।
ধারণা এবং লিপি: সার্বিক মুখোপাধ্যায়]
আদর্শ> বুঝলেন, সবদিকেই না সমস্যা।
বিবেক> মানে ?
আদর্শ> মানে - সবাই আর Survive করতে পারবো না।
বিবেক> ডারউইন বলেছেন?
আদর্শ> ডারউইন - হা হা ডারউইনতো ঈশ্বর আসলে বিষয়বস্তুটা হলো পরিবেশ। এই পরিবেশের সাথে খাপখাইয়ে নিতে না পারলেই কিন্তু মৃত্যু।
বিবেক> কিন্তু মানুষতো খাপখাইয়ে নিচ্ছে।
আদর্শ> কিভাবে নিচ্ছে ?
বিবেক> জল কিনে খাচ্ছে , বাড়ির খরগোশকে ঘাস কিনে খাওয়াচ্ছে, কয়েকদিন পর অক্সিজেন কিনে খাবে। সরকার যেরকম ফ্রীতে জলদেন সেরকম হয়তো অক্সিজেন ও দেবেন। অনেকে অক্সিজেনের নেশাও করবে।
আদর্শ> এতে Need আর লাক্সারির গল্পটা হচ্ছেনা। আমি বলছি এই মুহূর্তের পরিবেশটা বুঝতে গেলে excess need আর basic need এর তফাৎ টুকুই যথেষ্ট নয়।
বিবেক> দাঁড়ান দাঁড়ান আপনি বিষয়টা ধরেছেন ঠিকই। কিন্তু আপনি বোধয় শুধু pessimist উদহারণ গুলোই ভাবছেন।
আদর্শ> Optimist উদাহরণও আবার কিছু আছে নাকি ?
বিবেক> তবে স্বাভাবিক উদাহরণত কিছু আছে নাকি? নাকি এটা সমস্তটাই সেই - গ্লাসে মাঝামাঝি জ্লনেই আর জলে মাঝিনেই-এর মতো ব্যাপার। না একটা সময়তো ছিল
যখন মানুষ এই গাছ থেকেই তার সমস্ত খাবার যেমন - শাক, সবজি, ধান, গম এই সমস্ত কিছুই জোগাড় করতো। আখ ডাব আরো কতকিছু। তখনতো আর টাকার প্রয়োজন পড়তোনা। তারপর সরকার রেশন ব্যবস্থা শুরু করলো। আমাদের নদী নালা পুকুর কমতে শুরুকরলো। তাইজন্যই সরকার জলটা ফ্রীতে দিচ্ছেন, এরপরেও দেবেন।
আদর্শ> ধ্যার একটু শুনুননা চুপকরে, আপনি যেটা বলছেন সেটাতো ওই পুকুর কাটার দরকার প্রসঙ্গ। আমায় আমারটা একটু বলতে দিন, একটু শুনুন। শুনুন যখন তখন ভূমিকম্প সুনামি হঠাৎ হঠাৎ ঝড় আসছে, প্রকৃতির রূপ বদলে যাচ্ছে। আমাদের উচিত এখন প্রকৃতির সাথে খাপ খাইয়ে চলা।খাপ খাইয়া না চলতে পারলে কিন্তু সমূহ বিপদ, মানে মৃত্যু। ডারউইন যদি এই মুহূর্তে থাকতেন তিনিও এই কথাটাই বলতেন।
বিবেক> এই বীভৎসতাকি আমরা জানিনা ? কিন্তু যেদিন হবে সেদিন হবে ভেবে একজন মানুষতো আর কিছু করতে পারবে না।
আদর্শ> এই জন্যইতো আমি শুরুতে বললাম, সবাই সার্ভাইব করতে পারবেনা। এত হাতাশাবাদ চর্চাকরলে মৃত্যু তো আসবেই। যেদিন আসবে সেদিন মরেযাবো। এরকম ছাড়াতো আর কোনো উপায় নেই।
আদর্শ> আমাদের পক্ষে সম্ভবকিনা যানিনা, তবে সার্ভাইব করতে গেলে সম্ভব করতে হবে। একটা কথা বলছি একটু শুনুন - যেকোনো সময় ভূমিকম্প আসতেপারে, ভূমিকম্পের সময় বাড়িথেকে বেরিয়ে আসতে গেলেন। সিঁড়ি কিন্তু সবথেকে আগে ভাঙে। ধরুন বাড়ি থেকেও বেরিয়ে আসলেন কিন্তু আপনার চার পাশেওতো বাড়ি। সেগুলো যদি ভেঙ্গেপড়ে ! সবথেকে বড়কথা চারপাশে একটাও গাছ নেই, গাছত মাটিকে শক্ত করে ধরে রাখে। অন্তত ৫০০ মিটার দূরত্বের মধ্যে, মানে একটা দৌঁড়ে পৌঁছেযাবে এরকম দূরত্বের মধ্যে মাঠ চাই।এরকম মাঠ, যেখানে বাড়ি ভেঙে মাঠটাকে অতিক্রম করতে পারবেনা। যে মাঠের মধ্যে গিয়ে দাঁড়ালে ভূমিকম্পের সময় আপনি নিজের জীবন বাঁচাতে পারবেন।
বিবেক> আমার-না সেই লাইনগুলো মনে পড়ছে। "গাছ সবার আগে এলেন, গাছ সবার পরে মরেন, গাছ সবার পরে পড়েন।"
আদর্শ> কিন্তু গাছ মরছেন। গাছ নিজে জন্ম দেওয়ার সময়তেই মারাযাচ্ছেন। মাটিতে জলনেই, গাছ জন্মালেন, বড় হলেন, অনেককে মাতৃস্নেহে বড় করলেন, কিন্তু নিজে মা হতে পারলেন না মারাগেলেন।
বিবেক> মশাও বাড়ছে তাইনা ?
আদর্শ> মশা বাড়ছে উকুন বাড়ছে ticks বাড়ছে বিভিন্ন ধরণের ভাইরাস জীবাণু সব লক্ষ লক্ষ বছরের ঘুমথেকে উঠছে। এর পরথেকে দেখবেন কারেন্ট অফ হাওয়াটাওনা বেড়ে যাবে। তখন আর মতো এইটা তোমার গান - "তুমি লোডশেডিংয়ে চাঁদের আলোর স্বর, তুমি জ্বরের শেষে সূর্য ধোয়া ঘর," নয়। এইটা তোমার গান - জল নেই তাই লোডশেডিং সারা ঘর, তুমি ঝড়ের শেষে সূর্য পোড়া ঘর।
আদর্শ> আমিতো ভয় দেখাচ্ছিনা। আমিতো শুধু deta দিচ্ছি, আপনি ভয় পাচ্ছেন।
বিবেক> হ্যা। deta গুলো ভয় ছাড়া আর অন্য কোনো অনুভূতি তৈরী করতে পারেকি ?
আদর্শ> কেন? Bliss
বিবেক> ধংসে আনন্দ ?
আদর্শ> সিমটম বুঝুন, খাদ্য খাদক সম্পর্ক বিগড়েছে, সেই কারণে জনসংখ্যাও বেড়েছে। আর গাছ খুনও বেড়েছে। আচ্ছা জ্বর যদি হয় তাহলে শুধুতো জ্বরের ওষুধ খাওয়ালে হবেনা। আসল ইনফেকশনের জায়গাটাকেও খুঁজে বের করতে হবে। ইনফেকশনের জায়গাটাকি আমরা জানি?
বিবেক> হ্যা জানি কিন্তু এত আবর্জনা এত ময়লা, এত গাড়ির ধোঁয়া কলকারখানা, আর সব আবর্জনাতো নদীর দিকেই যাচ্ছে। নদীর গতিপথ ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সন্তানেরা ঠিককরে দিচ্ছে মাতৃজঠর কেমন হবে?
আদর্শ> আমি সেদিকে ভাবছিইনা। আমাদের উচিত ভার্টিক্যালি গার্ডেনিং থেকে শুরু করা। কঙ্ক্রীট গুলো সবুজ করে দেওয়া। তারপর মাটি খুঁড়ে গাছ লাগানো। প্রয়োজন পড়লে সিমেন্ট খুঁড়ে মাটি বের করে গাছ লাগাতে হবে। প্রাথমিক ভাবে নিঁ তুলসী এরকম কিছু গাছ লাগানো যেতে পারে। তারপরে কোন গাছ থেকে কারা খাবার পান সেই বুঝে প্লানিং প্লান্টিং করা যেতে পারে।
বিবেক> আপনাকে একবার থামাই, আমার সময় কমে এসেছে, আপনি এই ভূমিকম্পের জন্য অবাস্তব প্রিকশন এর বলছেন না, এটা যদি কোনোকালে সম্ভব হয় তাহলে বন্যাতেও বিপদ কিছুটা কমবে।
আদর্শ> দেখুন ভূমিকম্পের গাছ এবং মাঠ বন্যার সময় আশ্রয় এবং খাদ্য যোগান দিতেপারে। যদি দেখেন সামনে সামনি ফলগাছ আছে তারমানে তার আশেপাশে অঞ্চলে বোট এবং পিপুল গাছও আছে। এটাই এক্সপেকটেড, পাখিদের এটাই কাজ। পাখিরা যদি না থাকে তবে বট আর পিপুল গাছও হবে না। তাহলে আসি আবার দেখা হবে।
Concept and Script: Sarbik Mukherjee